হৃদয় এস সরকার
১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ও মহিলা ওয়ার্ডে ছাদের আস্তরণ কয়েকটি স্থানে খসে পড়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কে সময় পার করছে ভর্তি হওয়া রোগীরা।
কয়েকদিন আগে শিশু ওয়ার্ডের উপরের আস্তরণ ভেঙে পড়ে শেফালী বেগম নামে একজন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে রোগী ও রোগীর আত্মীয়—স্বজনসহ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
ছোট্ট বাচ্চা নিয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি বিলকিস বেগম ও মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি আফরোজা খানম বলেন, উপরের ছাদ থেকে ধ্বসে পড়ছে আস্ত আস্ত ইটের টুকরো। এগুলো আমাদের শরীরে পড়ছে। ব্যথা পাচ্ছি আমরা। একটু একটু করে আস্তরণ খসে পড়ছে; এতে করে বাচ্চা নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আমরা সময় কাটাচ্ছি। সদর হাসপাতালে আমরা চিকিৎসা নিতে এসে উল্টো ভয় নিয়ে এই জায়গায় ভর্তি রয়েছি। এরআগেও একজনের শরীরে বড় ইটের টুকরো পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু সমাধানে কোনো ব্যবস্থাই চোখে পড়ছে না।
সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত কর্মচারী ও নার্সরা বলেন, সবচেয়ে বেশি প্রাণভয়ে আমরা ভুগছি। হাসপাতালটি অনেক পুরনো হওয়াতে নারী—পুরুষসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের উপরের ছাদ ভেঙে যাচ্ছে। ছাদের আস্তরণ খসে খসে আমাদের শরীরে পড়ছে। রোগীদেরকে সেবা দিতে গিয়ে আমরাও চরম হুমকির মুখে পড়েছি। কখন না জানি বড় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এরআগেও দুইজন রোগী উপর থেকে পড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছে। পুরো হাসপাতালটির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মাহমুদুল কবীর বাশার কমল বলেন, সময়ের পরিক্রমায় মাত্র ১০ শয্যা থেকে ক্রমান্বয়ে ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে নরসিংদী সদর হাসপাতাল। কিন্তু অর্ধশতাব্দীকাল পার হলেও এর অবকাঠামোগত তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। শুধু দফায় দফায় মেরামত হয়েছে। এখন বিভিন্ন ওয়ার্ডের ছাদের আস্তরণ খসে পড়ছে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করি তারা ব্যবস্থা নিবেন।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান শাসনামলের ১৯৬২ সালে রুরাল হেলথ সেন্টার নামে ১০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। ১০ বছর পর রুরাল হেলথ সেন্টার থেকে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নীত করা হয়। ১৯৭৬ সালে হাসপাতালটি ৩১ শয্যায় উন্নীত হয়। ১৯৮৪ সালে হাসপাতালটির ক্যাপাসিটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০০৩ সালে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও এর অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন করা হয়নি।
Leave a Reply